“দুবাই যামু টেকা দাও” – দুবাই ভ্রমণ এর গল্প
Tehjib Barat
ছোটবেলায় নাটকে দেখা এই ডায়লগ হয়ত অনেকের মনে আছে। এই ডায়লগ শুনে অনেকেরই ধারনা হবে যে দুবাই যাওয়া অনেক টাকা পয়সার ব্যপার। সত্যি বলতে দুবাই আসলেই একটি ব্যয়বহুল জায়গা। কিন্তু বিশ্বায়নের এই যুগে চাইলে দুবাইয়ের মত ব্যয়বহুল জায়গাও কম খরচে ঘুরে আসা সম্ভব।
আমি দুবাই গিয়েছিলাম এই বছর রোজার ঠিক আগে আগে। ৪ রাত ছিলাম
প্রথম দিন – Palm Jumeirah – The Lost Chambers Aquarium – অসাধারণ একটা অভিজ্ঞতা। ছোট ছোট আকুয়ারিয়াম আছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ আর জলজ প্রাণীর। হাজার হাজার রকমের সামুদ্রিক প্রাণীর বিশাল এক আকুয়ারিয়াম আছে ঠিক মাঝ খানে যেটার ৩ দিকে কাচ দিয়ে ঘেরা।
The Atlantis Palm – বিশ্ববিখ্যত হোটেল, মূল হোটেলে ঢুকতে পারবেন না কিন্তু আশেপাশের বিশাল চত্বরে যেতে পারবেন।
Crescent Road – পাম জুমেইরাহকে গোল করে ঘিরে রাখা রাস্তা।
Adventure Park – থিম পার্ক। অনেক গুলি বেশ ভয়ঙ্কর এবং থ্রিলিং রাইড আছে।আমি দুবাই গিয়েছিলাম এই বছর রোজার ঠিক আগে আগে। ৪ রাত ছিলাম
প্রথম দিন – Palm Jumeirah – The Lost Chambers Aquarium – অসাধারণ একটা অভিজ্ঞতা। ছোট ছোট আকুয়ারিয়াম আছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ আর জলজ প্রাণীর। হাজার হাজার রকমের সামুদ্রিক প্রাণীর বিশাল এক আকুয়ারিয়াম আছে ঠিক মাঝ খানে যেটার ৩ দিকে কাচ দিয়ে ঘেরা।
Burj Al Arab – পৃথিবীর সব চেয়ে বিলাসবহুল হোটেল। এক রাতের সর্বনিম্ন ভারা ১ লাখ টাকার মত। এটারও সামনে দিয়ে ঘুরে এসেছি।
দ্বিতীয় দিন – Al Ajman – দুবাইএর মত এমিরেটস এর আরেকটি শহর। দুবাইয়ের মত জাঁকজমক নেই কিন্তু সুন্দর জায়গা
Dubai Mall – Dubai mall পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম শপিং মল।হাজারের
উপর দোকানের পাশাপাশি এখানেও খুব সুন্দর একটি আন্ডারওয়াটার আকুয়ারিয়াম, সিনেমা হল, আইস রিঙ্ক আছে।
Burj Khalifa – এটার বিস্তারিত বলার কিছু নেই, সবাই জানে।
তৃতীয় দিন – Dubai archeological museum – দুবাইয়ের ইতিহাস, সংস্কৃতি জীবন-যাপনের চিত্র খুব সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এখানে। অবশ্য-অবশ্যই যাওয়ার মত একটি জায়গা।
Old Souq – দুবাইয়ের সব চেয়ে পূরানো বাজার। এখানে যেয়ে কেন জানি আমাদের চক বাজারের কথা মনে পরেছে। তবে অনেক পরিষ্কার ও সাজানো।
Desert Safari – মরুভূমিতে গাড়ি নিয়ে ঘোরা, সন্ধ্যায় মরু ক্যাম্পে খাওয়া দাওয়া সাথে বেলি ডান্স, তানুরা ডান্স আর ফায়ার শো। বিস্তারিত গুগল করুন।
চতুর্থ দিন – Gold souq – দুবাইয়ের গোল্ডের মার্কেট, চোখ ধাঁধানো যায়গা।
Spice Souq – মশলার মার্কেট। সারি সারি দোকানে হাজার রকমের মশলা সাজানো আছে। নানান রকম মশলার রঙ আর ঘ্রাণে ভরপুর.
Al Ghubaiba marine Station – নদী পার হওয়ার যায়গা। এখান থেকে আব্রা ( ইঞ্জিনচালিত ছোট নৌকা) নিয়ে নদীতে ঘোরা যায়।
Dolphinium – ডলফিন শো দেখা যায় এখানে। সময় নিয়ে যেতে হবে।
Deira city center – সুন্দর একটা শপিং মল। প্রায়ই প্রচুর ডিস্কাউন্ট থাকে।
Marina cruise – দুবাই মেরিনা থেকে শুরু করে আরব সাগরের কাছাকাছি নিয়ে যাবে। সাথে ভরপুর খাওয়া দাওয়া আর তানুরা ডান্স।
পঞ্চম দিন- Mall of the Emirates – আমার দেখা দুবাইয়ের সব চেয়ে সুন্দর শপিং মল। অজস্র ব্রান্ড শপের পাশাপাশি এখানে আইস স্কি করার রিংক আছে।
খরচঃ আমি এমিরেটস এ গিয়েছি, এসেছি শ্রীলঙ্কান এয়ারলাইন্সে। টুকটাক কেনা কাটা করেছি। সাফারি ও ক্রুজ করেছি। এসব কারণে একটু বেশি খরচ পরেছে। তবে বাজেট ট্যুর করতে চাইলে ৫ দিনে ৪২০০০-৪৫০০০ টাকায় সম্ভব সব সহ। এই হিসাব শুধু ফ্লাইট, হোস্টেলে থাকা, খাওয়া এবং মেট্রোতে সব জায়গায় যাওয়ার জন্য প্রযোজ্য। এর বাইরে আপনাকে ভিসা, বিভিন্ন জায়গায় ঢোকার টিকেটের খরচ হিসাব করতে হবে।
Dubai Mall – Dubai mall পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম শপিং মল।হাজারের
উপর দোকানের পাশাপাশি এখানেও খুব সুন্দর একটি আন্ডারওয়াটার আকুয়ারিয়াম, সিনেমা হল, আইস রিঙ্ক আছে।
Burj Khalifa – এটার বিস্তারিত বলার কিছু নেই, সবাই জানে।
Old Souq – দুবাইয়ের সব চেয়ে পূরানো বাজার। এখানে যেয়ে কেন জানি আমাদের চক বাজারের কথা মনে পরেছে। তবে অনেক পরিষ্কার ও সাজানো।
Desert Safari – মরুভূমিতে গাড়ি নিয়ে ঘোরা, সন্ধ্যায় মরু ক্যাম্পে খাওয়া দাওয়া সাথে বেলি ডান্স, তানুরা ডান্স আর ফায়ার শো। বিস্তারিত গুগল করুন।
Spice Souq – মশলার মার্কেট। সারি সারি দোকানে হাজার রকমের মশলা সাজানো আছে। নানান রকম মশলার রঙ আর ঘ্রাণে ভরপুর.
Al Ghubaiba marine Station – নদী পার হওয়ার যায়গা। এখান থেকে আব্রা ( ইঞ্জিনচালিত ছোট নৌকা) নিয়ে নদীতে ঘোরা যায়।
Dolphinium – ডলফিন শো দেখা যায় এখানে। সময় নিয়ে যেতে হবে।
Deira city center – সুন্দর একটা শপিং মল। প্রায়ই প্রচুর ডিস্কাউন্ট থাকে।
Marina cruise – দুবাই মেরিনা থেকে শুরু করে আরব সাগরের কাছাকাছি নিয়ে যাবে। সাথে ভরপুর খাওয়া দাওয়া আর তানুরা ডান্স।
রাতে ফেরার ফ্লাইট ছিল তাই এই দিন আর কোথাও যাওয়া হয়নি।
যাতায়াতঃ ঢাকা – দুবাই – ঢাকা বাই এয়ার । আসা-যাওয়া ২ সময়েই দুবাই এয়ারপোর্ট ঘুরে দেখেছি। দুনিয়ার সবচেয়ে বড় এয়ারপোর্ট বলে কথা!
যারা সস্তায় ও নির্ঝঞ্ঝাট ঘুরে আসতে চান তাদের জন্য-
* দুবাইয়ের ভিতরে যেকোনো জায়গায় আসা যাওয়ার জন্য মেট্রো ব্যবহার করবেন। প্রথম দিনই একটা মেট্রো কার্ড কিনে নিবেন। এই কার্ড যতদিন থাকবেন যেকোনো মেট্রো স্টেশনএ রিচারজ করে ইচ্ছামত ব্যাবহার করতে পারবেন। যেখানে মেট্রো যায়না সেখানে এই কার্ড দিয়েই বাস ব্যবহার করতে পারবেন। মেট্রো/বাস এর খরচ ট্যাক্সির দশ ভাগের এক ভাগ।
* একা গেলে বেশ কিছু ভাল হোস্টেল আছে। এক রুমে ৬ জন থাকা যায়। সবার ব্যাগ রাখার জন্য আলাদা লকার আছে। ২ জন গেলে পুরান দুবাইতে হোটেল নেওয়ার চেষ্টা করবেন । পুরান দুবাই মানে ‘দেইরা’ এবং ‘বার দুবাই’। আমি ছিলাম বার দুবাইতে একটা হোটেলে। ২০০০ টাকার মতো পরেছিল প্রতি রাতের জন্য।
* অল্প কিছু দালাল আছে পুরান দুবাইতে যারা আপনাকে নানান রকম জিনিশ গছিয়ে দিতে চাইবে। ‘Not interested’ বলে চলে যাবেন। আপনাকে বেশি ঘাটাবেনা কারণ ওখানের পুলিশ বেশ কঠোর এসব ব্যপারে।
* ডেসার্ট সাফারি আর মেরিনা ক্রুজ আগে থেকে বুকিং করবেন।
* একা গেলে বেশ কিছু ভাল হোস্টেল আছে। এক রুমে ৬ জন থাকা যায়। সবার ব্যাগ রাখার জন্য আলাদা লকার আছে। ২ জন গেলে পুরান দুবাইতে হোটেল নেওয়ার চেষ্টা করবেন । পুরান দুবাই মানে ‘দেইরা’ এবং ‘বার দুবাই’। আমি ছিলাম বার দুবাইতে একটা হোটেলে। ২০০০ টাকার মতো পরেছিল প্রতি রাতের জন্য।
* অল্প কিছু দালাল আছে পুরান দুবাইতে যারা আপনাকে নানান রকম জিনিশ গছিয়ে দিতে চাইবে। ‘Not interested’ বলে চলে যাবেন। আপনাকে বেশি ঘাটাবেনা কারণ ওখানের পুলিশ বেশ কঠোর এসব ব্যপারে।
* ডেসার্ট সাফারি আর মেরিনা ক্রুজ আগে থেকে বুকিং করবেন।
মনে রাখবেন ওরাই আপনাকে হোটেল থেকে ওদের গাড়িতে নিয়ে যাবে আবার সাফারি/ ক্রুজ শেষে আপনাকে হোটেলে নামিয়ে দিয়ে যাবে।
* প্রচুর ইন্ডিয়ান রেস্টুরেন্ট আছে। আর যেকোনো মলে গেলে তো ফুড কর্নার আছেই। সস্তায় খেতে চাইলে চেষ্টা করবেন ইন্ডিয়ান রেস্টুরেন্টে খেতে। খাবারের জন্য প্রতি বেলায় কমপক্ষে ২৫০-৩০০ টাকা বাজেট রাখতে হবে।
* দুবাইতে অনেক গরম ( আমি যখন গেছি তখন ৪২ ডিগ্রি ছিল) কিন্তু আদ্রতা কম। তাই ঘাম কম হলেও প্রচুর পানির পিপাসা লাগে। সব সময় ছোট সুপারস্টোর বা মেট্রো স্টেশন থেকে পানি কেনার চেষ্টা করবেন। একই পানি ১ দিরহাম থেকে ২০ দিরহামে বিক্রি হয় যায়গা ভেদে। রাস্তা ঘাটে প্রচুর ভেন্ডিং মেশিন আছে। সেখান থেকেও নিতে পারেন। খাটি কমলা বা আখের জুস পাওয়া যায় ১০ দিরহামে বিভিন্ন জায়গায়।
* কোনও শপিং মলে গেলে পুরোটা দিন সময় নিয়ে যাবেন।
* দুবাইতে অনেক গরম ( আমি যখন গেছি তখন ৪২ ডিগ্রি ছিল) কিন্তু আদ্রতা কম। তাই ঘাম কম হলেও প্রচুর পানির পিপাসা লাগে। সব সময় ছোট সুপারস্টোর বা মেট্রো স্টেশন থেকে পানি কেনার চেষ্টা করবেন। একই পানি ১ দিরহাম থেকে ২০ দিরহামে বিক্রি হয় যায়গা ভেদে। রাস্তা ঘাটে প্রচুর ভেন্ডিং মেশিন আছে। সেখান থেকেও নিতে পারেন। খাটি কমলা বা আখের জুস পাওয়া যায় ১০ দিরহামে বিভিন্ন জায়গায়।
* কোনও শপিং মলে গেলে পুরোটা দিন সময় নিয়ে যাবেন।
২/৪ ঘণ্টায় কিছুই দেখতে পারবেন না।
* যেখানেই শপিং করতে যান, লজ্জা ভুলে ডিস্কাউন্টের কথা জিজ্ঞেস করবেন। ওরা প্রায় সময়ই জিজ্ঞেস না করলে ডিস্কাউন্টের কথা নিজে থেকে আপনাকে বলবেনা।
* প্লেনের টিকেট যাওয়ার অন্তত এক মাস আগে কাটলে কমে পাবেন।
সকল উন্নত শহরের মত দুবাইও খুব পরিচ্ছন্ন একটি শহর। যেখানে সেখানে ময়লা ফেললে বড় অঙ্কের জরিমানার কবলে পড়তে পারেন। তাই যেখানেই ভ্রমণে যান না কেন, পরিবেশের পরিচ্ছন্নতার দিকে লক্ষ্য রাখুন।* যেখানেই শপিং করতে যান, লজ্জা ভুলে ডিস্কাউন্টের কথা জিজ্ঞেস করবেন। ওরা প্রায় সময়ই জিজ্ঞেস না করলে ডিস্কাউন্টের কথা নিজে থেকে আপনাকে বলবেনা।
* প্লেনের টিকেট যাওয়ার অন্তত এক মাস আগে কাটলে কমে পাবেন।
0 মন্তব্য(গুলি):
for post your Comment plz select this option from the list
Comment as: Anonymous